সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ দেশে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৫ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এছাড়া দুটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
রবিবার (২৮ জুন) অতি বৃষ্টি এবং উজানের নেমে আসা বৃষ্টির পানির জন্য দেশের সকল প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৩ দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আর ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ৬ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। অপরদিকে লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুশিয়ারা, সমেশ্বরী ও ভোগাই-কংস নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদী সারিয়াকান্দি ও কাজিপুর পয়েন্টে এবং ৪৮ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা রয়েছে।
তাছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি স্থিতিশীল ও বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করতে পারে। অপরদিকে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত অথবা স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং বিপৎসীমার উপরে অবস্থান করতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, দেশের ১০১টি পানি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৭৮টিতে পানি বাড়ছে, ২৩টিতে কমছে। আর ৯টির স্টেশনে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তার মধ্যে সুরমার পানি কানাইঘাটে ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, জাদুকাটা পানি লরেরগড় পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, যমুনার পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের বাংলাদেশ সংলগ্ন বেশকিছু অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ২৬ জুন সকাল ৯টা থেকে ২৭ জুন সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশের লাউরেরগড়ে ২৪২ মিলিমিটার, দুর্গাপুরে ১৫১, কানাইঘাটে ১০০, মহেশখোলায় ২৩১, শেওলায় ১২৫, লাটুতে ১০০, সুনামগঞ্জে ১৯০, সিলেটে ১১০ এবং ডালিয়ায় ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে একই সময়ে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৪৮৯৫ মিলিমিটার, পাসিঘাটে ১৫৯, শিলংয়ে ১৬৮ এবং জলপাইগুড়িতে ১৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।